কলকাতা টাইমস 24 : রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত এবার চরমে। পুরভোটের দিনেই টুইট করে সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারার উপধারা ২-এর অধীনে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত করে দিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহেই বঙ্গে বাজেট অধিবেশনের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে রাজ্যপালের এমন নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত বিতর্ক সৃষ্টি করলো। যদিও ধনখড় স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাজ্যের মন্ত্রিসভার সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজ্যপাল এভাবে টুইট করে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করতে পারেন না।
টুইটে রাজ্যপাল স্পষ্ট লিখেছেন, ‘সাংবিধানিক ক্ষমতা অনুযায়ী ১৭৪ ধারা ২ নম্বর উপধারা বলে আমি রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত করছি।’ সঙ্গে রাজ্যপালের সই করা একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
এই ঘটনায়, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘এই ধরনের ঘটনা অভিপ্রেত নয়। এমন কোনও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল টুইট করে জানাতে পারেন না।’
রাজ্যপালের এ হেন সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলায় ইতিপূর্বে নির্দেশিকা জারি করে এভাবে বিধানসভার অধিবেশন স্থগিত রাখার ঘটনা আগে ঘটেনি। রাজ্য সরকার যখন স্পষ্ট করে এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি, তখন স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপালের এই টুইট কাম্য নয়। রাজ্যপালের অনুমোদন যেমন জরুরি, তেমনি বিধানসভার অধিবেশনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের আহ্বান ও সিদ্ধান্ত জরুরি। সেখানে আচমকা রাজ্যপালের এ হেন বিজ্ঞপ্তি সংঘাতেরই জন্ম দেবে নতুন করে এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট পেশ হতে পারে আগামী মার্চ মাসে। গত ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তার পর এখনও জানানো হয়নি রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশন কবে হবে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত যে কার্যত নজিরবিহীন এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
বস্তুত, রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নতুন কোনও ঘটনা নয়। সম্প্রতি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালকে ‘ঘোড়ার পাল’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। এমনকী টুইটারেও তাঁকে ‘বাধ্য’ হয়ে ব্লক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত ২৬ জানুয়ারি বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে অধ্যক্ষকে বেনজির আক্রমণ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তার পরেই কড়া পদক্ষেপ করে রাজ্য। রাজ্যপাল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিধানসভায় আসতে চাইলে কারণ জানতে চাওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন স্পিকার বিমান বন্দোপাধ্যায়।
ফের এই ঘটনায় নতুন করে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত বাড়ল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।