শুরু হয়েছে নতুন বছর। পুরনো সব স্মৃতি কাটিয়ে নতুনকে আপন করে নেওয়ার পালা চলছে। একে অপরকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানানোও চলছে। কিন্তু সবটাই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এখন আর কেউ সেভাবে গ্রিটিংস কার্ডে (Greetings Card) শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় না। কোথায় যেন হারিয়েই গিয়েছে সেই নানান ছবিওয়ালা গ্রিটিংস কার্ডগুলো।
গ্রিটিংস কার্ড কেনার লাইনে দাঁড়িয়েছেন আপনিও? – Did you ever wait in a queue for Greetings Cards?
নব্বই দশক তো বটেই, বিশের দশকের প্রজন্মের মধ্যেও ছিল গ্রিটিংস কার্ড আদানপ্রদানের চল। বর্ষবরণের বেশ কিছুদিন আগে থেকেই দোকানে দোকানে ভিড় জমে যেত গ্রিটিংস কার্ড কেনার। কে কোন সুন্দর কার্ডটা সবার আগে কিনবে, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলত রীতিমতো বাচ্চাদের মধ্যে। আর সেসব কিনে আনার পর চলত বাছাই। কোন কার্ডে কার নাম লিখে শুভেচ্ছা জানানো হবে, সে সব নিয়ে গভীর চিন্তায় ভুলত নাওয়াখাওয়াও।
এখন গ্রিটিংস কার্ড মানেই নস্টালজিয়া – Greetings Cards have become nostalgia now
শুধুমাত্র কেনা কেন, আমাদের মধ্যে অনেকেই আবার নিজের হাতে কার্ড তৈরি করে তা দিতেন বন্ধুদের বা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। সুন্দর করে কার্ডে এঁকে, তাতে নানান ডিজাইন করে কাউকে দেওয়ার মধ্যে যে কতটা আবেগ লুকিয়ে থাকে, তা যারা সেই কার্ড কাউকে দেন, তারাই জানেন। তবে এখন এই গ্রিটিংস কার্ড এক নস্টালজিয়া হয়েই রয়ে গিয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া কেড়েছে গ্রিটিংস কার্ডের আবেগ – Social Media snatched away the emotion of Greeting Cards
আজকের এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সেই গ্রিটিংস কার্ডের অস্তিত্ব হারিয়েছে। এখন তো নতুন বছরের শুভেচ্ছা হোক বা যে কোনও বিশেষ দিনের শুভেচ্ছা, সবটাই হয়ে যায় ফোনে। ফোন তো অনেকদিন আগেই কেড়ে নিয়েছিল হাতে লেখা চিঠির স্বাদ, আর এখন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রিটিংস কার্ডের গুরুত্ব বা আবেগও ভুলিয়ে দিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মের বাচ্চারা হয়ত গ্রিটিংস কার্ড বলে আদৌ কিছু হয়, সেটাই জানে না। তাদের কাছে ‘নিউ ইয়ার উইশ’ মানে সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুদের একটা মেসেজ আর স্কুলে গিয়ে চকোলেট দেওয়া নেওয়া। সবকিছুর নীচে যেন কীভাবে চাপা পড়ে গিয়েছে সেই ছোটবেলার ছোটো ছোটো আবেগগুলো।
কী মিস করে গেল নতুন প্রজন্ম? – What did the new generation miss?
তবুও এখনও বছরের পর বছর অনেক দোকানেই ঝোলানো থাকে গ্রিটিংস কার্ডের গুচ্ছ। সেভাবে বিক্রি নেই বললেই চলে। অনেক দোকানে তো আবার গত বছরের গ্রিটিংস কার্ডও থেকে গিয়েছে। এখন আর এই প্রজন্মের সেই সময়ও নেই যে গ্রিটিংস কার্ডে হাতে লিখে বন্ধুদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাবে আর সেই আবেগও নেই। কিন্তু এই সমস্ত কিছুর মধ্যে দিয়ে তারা বুঝতেই পারল না, তারা ঠিক কোন নস্টালজিয়াটা মিস করে গেল। আর কিছু বছর পর হয়ত সেই দোকানে দোকানে গ্রিটিংস কার্ড ঝোলানোই থাকবে না। এভাবে ফোন, সোশ্যাল মিডিয়ার চক্করে মুছে যাবে মানুষের আরও এক আবেগ।