

কলকাতা: খাস কলকাতার বুকে ঘটে গেলো এক চরম লজ্জাজনক ঘটনা, বড়বাজারে এক ব্যবসায়ীকে বাংলা বলার অপরাধে হেনস্থার মুখে পড়তে হলো| কলকাতার বড়বাজারে সমস্ত ভাষাভাষীর মানুষের আনাগোনা থাকলেও মাতৃভাষা কিন্তু বাংলা, তাহলে সেখানে বাংলায় কথা বলা কি অপরাধ?শুক্রবারের ঘটনায় অবাঙালিরা স্পষ্ট করেই দেন যে, সেখানে কথা যদি বলতেই হয় তবে তা হিন্দিতে বলতে হবে নতুবা মুখ বন্ধ|
গত শুক্রবার রোহিত মজুমদার ব্যবসায়িক কাজে বড়বাজারে যান, এবং সন্ধ্যে হয়ে যাওয়ায় তিঁনি তাঁর প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজতে এবং দোকান খোলা আছে কিনা তা দেখতে উঁকি দেন| আর ঠিক তখনই একজন অবাঙালি ব্যক্তির মুখোমুখি হন এবং রোহিত বাবুর কাছ থেকে অবাঙালি ব্যক্তিটি জানতে চান, যে তিঁনি কি খুঁজছেন? তখন রোহিত বাবুর হাতে একটি জ্বলন্ত সিগারেট ছিল, অবাঙালি ব্যক্তিটি রোহিত বাবুকে ভিতরে আসতে বলেন| ভিতরে যেতেই অপর একটি অবাঙালি ব্যক্তি রোহিত বাবুকে ধূমপানের অপরাধে আচমকাই গালিগালাজ করতে শুরু করেন, সাথে সাথেই রোহিত বাবু জানান যে তিঁনি সিগারেট নিয়ে ঢুকলেও তাতে টান দেননি, এবং তিঁনি এটাও জানান যে তাঁকে ওখানে ঢুকতে বলা হয়েছে| কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনো কথা শোনেননি, গালিগালাজের মাত্রা বাড়তেই থাকে এবং শেষ পর্যন্ত রোহিত বাবুকে ওই বিল্ডিং এর কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়| সেখানে উপস্থিত থাকা অবাঙালি ব্যক্তিরা ক্রমাগত রোহিত বাবুকে হিন্দিতে অপমান করতে থাকেন , যদিও রোহিত বাবু তাঁদের বাংলায় বলার জন্য আবেদন জানান কারণ হিন্দি তাঁর বুঝতে অসুবিধে হচ্ছিলো|হিন্দি বুঝতে না পারায় এবং বাংলা বাংলা বলায় তাঁকে আরও অপমানিত হতে হয়| প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো তাঁকে হেনস্থার শিকার হতে হয় এবং ধূমপানের অপরাধে ৫০০ টাকা জরিমানা চাওয়া হয়, কিন্তু শেষ অবধি অনেক জোরাজোরি করার পরে ২০০ টাকা দিতেই হয়|
বাংলা ভাষায় কথা বলায় অবাঙালিরা রোহিত বাবুকে ‘বাংলাদেশী’র তকমাও দেন| হেনস্থা হওয়ার সেই রাতেই অর্থাৎ শুক্রবার ই রোহিত বাবু বড়বাজার পুলিশের দ্বারস্ত হন এবং পুলিশকে সবটা জানান, যদিও কোনোরকম অভিযোগ নিতেই রাজি হয়নি পুলিশ| কিন্তু টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন| ওই এলাকার বাংলা পক্ষ থেকে এই নিন্দনীয় ঘটনার বিরুদ্ধে মিছিল করে| কলকাতার বুকে বাংলায় কথা বলার জন্য এরকম হেনস্থা সত্যিই নিন্দনীয়, চরম অপমানজনক আপামর বাঙালি জাতির কাছে|