

নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে দিল্লির শাহিনবাগে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলেছিল। প্রায় তিন মাস। তারপর করোনা পর্ব শুরু হতেই আন্দোলন ভাঁটা পড়ে। তবে দীর্ঘ করোনা পর্ব মিটতেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় সিএএ বিরোধী বিচ্ছিন্ন আন্দোলনের দেখা মিলেছি। এক বছর পর দিল্লির শাহিনবাগের আন্দোলন নিয়ে এক মামলার প্রেক্ষিতে শনিবার বড়সড় মন্তব্য করে শীর্ষ আদালত। তাদের বক্তব্য, আন্দোলন প্রদর্শন দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও তা সংযতপূর্ণ হওয়া উচিত। যত্রতত্র এবং যখন খুশি আন্দোলন করাটা মোটেই কাম্য নয়।
প্রসঙ্গত কেন্দ্রেথ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উত্তাল হয়েছিল দিল্লী সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তর। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। হিংসা ছড়ায়। ২০১৯এর ডিসেম্বরে দিল্লির শাহিনবাগে শুরু হওয়া সিএএ বিরোধী আন্দোলন ২০২০ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত চলে। দীর্ঘ ১০১ দিন ধরে চলা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বেসামাল হয়ে পড়ে কেন্দ্র। এই আন্দোলন নজর পড়ে সারা বিশ্বের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনার জেরে লকডাউন পর্ব শুরু হলে আন্দোলনস্থল থেকে সরে আসেন বিক্ষুব্ধরা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পথ আটকে আন্দোলন করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ পথ আটকে আন্দোলন করায় জনসাধারণকে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। বিষয়টি শীর্ষ আদালত পর্যন্ত গড়ালে তারা জানায়, গণতন্ত্র এবং বিরোধিতা পাশাপাশি চলতে পারে। কিন্তু এ ভাবে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চালানো মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
গত বছরই শীর্ষ আদালতের এহেন রায় নিয়ে ১২ জন সমাজকর্মী একটি হলফনামা দাখিল করেন। শনিবার সেই মামলারই শুনানি ছিল বিচারপতি এস কে কল, অনিরুদ্ধ বসু এবং কৃষ্ণা মুরারির ডিভিশন বেঞ্চে। আদালত তখন জানায়, প্রতিবাদের অধিকার যখন খুশি এবং যেখানে সেখানে প্রয়োগ করা যায় না। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলন চলতেই পারে, কিন্তু কোনও জনবহুল এলাকা দীর্ঘ দিন ধরে আটকে রেখে আন্দোলন চালালে অন্যদের অধিকার বাধাপ্রাপ্ত হয়, যা মোটেই কাম্য নয়। পাশাপাশি আদালত এটাও জানিয়ে দেয় যে, এই ধরনের আন্দোলন করতে এমন জায়গা বাছতে হবে, যেখানে অন্য কাউকে বাধা বা সমস্যার মুখে পড়তে না হয়।